বলিউডে পাঁচ দশকের ক্যারিয়ারে এমন কত সিনেমাই তো হাতে এসেছিল, যেগুলো ফিরিয়ে দিয়েছিলেন শ্রীদেবী। ঘটনাচক্রে, সেগুলো পরে বক্স অফিসে সাফল্যের জোয়ারে ভেসেছে। শ্রীদেবীর হাতছাড়া করার পর বক্স অফিস কাঁপানো সিনেমার তালিকাটা নেহাত ছোট নয়। তবে একটি সিনেমা নিয়ে তার ভক্তদের আফসোস যায় না— কেন যে ওই সিনেমাটিকে ‘না’ বলেছিলেন শ্রীদেবী!
এসএস রাজামৌলীর ‘বাহুবলী’র হাত ধরে দক্ষিণ ইন্ডাস্ট্রির গণ্ডি ছাপিয়ে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছিলেন প্রভাস থেকে রানা দগ্গুবতী, রম্যা কৃষ্ণনরা। ২০১৫ সালের ১৭ এপ্রিল মুক্তির প্রথম সপ্তাহেই প্রথম দক্ষিণ ভারতীয় ছবি হিসাবে ৩০০ কোটির গণ্ডি পার করেছিল ‘বাহুবলী’।
বছর দুয়েক পরে বক্স অফিসে নজির গড়ে ফেলেছিল ‘বাহুবলী-২’। ২০১৭ সালের ২৮ এপ্রিল মুক্তি পেয়েছিল সেটি। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে প্রথম ভারতীয় সিনেমা হিসাবে দেড় হাজার কোটির ব্যবসা করেছিল রাজামৌলীর ছবি।
‘বাহুবলী’ সিরিজে রাজমাতা শিবগামীর চরিত্রে দেখা গিয়েছিল রম্যা কৃষ্ণনকে। যে চরিত্রে রাজামৌলীর প্রথম পছন্দ ছিলেন শ্রীদেবী। ইন্ডাস্ট্রির জল্পনা নয়, লুকোছাপা না করে সংবাদমাধ্যমে সাফ জানিয়েছিলেন খোদ রাজামৌলী।
শ্রীদেবীর ফিরিয়ে দেওয়া চরিত্রটি নতুন বাঁক এনে দিয়েছিল রম্যার ক্যারিয়ারে। কন্নড়, মালয়ালম, তেলুগু ছবিতে কাজ করলেও ‘বাহুবলী’র আগে পর্যন্ত আমজনতার কাছে তেমন পরিচিত ছিলেন না।
রম্যার সাফল্যের পর নতুন করে প্রশ্ন উঠেছিল, ‘বাহুবলী’ ফিরিয়ে দিয়ে কি ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় ভুল করেছেন শ্রীদেবী?
রাজামৌলীর ছবিতে কাজ করতে কেন রাজি হননি শ্রীদেবী? এ নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছিলেন তিনি। এক সাক্ষাৎকারে রাজামৌলীর দাবি ছিল, শ্রীদেবীর নানা বায়নার কারণে প্রোডাকশন টিম বিরক্ত হয়ে গিয়েছিল। তার বায়না মেটাতে আমাদের ছবির বাজেট বেড়ে যেত।
শ্রীদেবীর বদলে শিবগামীর চরিত্রে রম্যাকে প্রস্তাব দিয়েছিলেন রাজামৌলী। পরে তিনি বলেছিলেন, এখন মনে হয়, আমাদের ছবিতে শ্রীদেবীকে দিয়ে কাজ করানোর ভাবনা ঝেড়ে ফেলায় আখেরে লাভই হয়েছিল। রম্যা দারুণ কাজ করেছিলেন।
রাজামৌলীর কথায় তিনি যে কষ্ট পেয়েছেন, তা জানাতে দেরি করেননি শ্রীদেবী। তিনি বলেছিলেন, ৫০ বছর ধরে ইন্ডাস্ট্রিতে রয়েছি। ৩০০ ছবিতে কাজ করেছি। আপনাদের কি মনে হয়, বায়না করলে এত ছবিতে কাজ করা সম্ভব হতো?
শ্রীদেবীর কণ্ঠে রোষের আভাসও পাওয়া গিয়েছিল। তার কথায়, আমি হতাশ! বায়না করলে আমাকে ছুড়ে ফেলে দিতেন এই ইন্ডাস্ট্রির লোকজন। তা সত্ত্বেও যখন এ ধরনের কথা শোনা যায়, তখন খুবই কষ্ট হয়।
এতেও থামেননি শ্রীদেবী। বলেছিলেন, আমি জানি না, প্রযোজকেরা রাজামৌলীকে কী ভুলভাল বলেছেন, আমি নাকি নানা দাবিদাওয়া করেছি। নিশ্চয়ই কোনও ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। তার (রাজামৌলীর) সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেলে খুশিই হতাম। তবে এ ভাবে খোলাখুলি কথা বলাটা খুব একটা সুস্থ রুচির পরিচয় নয়।
শ্রীদেবীর মন্তব্যে জলঘোলা শুরু হতেই পাল্টা দাবি করেছিলেন রাজামৌলী। মাসখানেক পর তিনি বলেছিলেন, বলিউডে দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রির একমাত্র পতাকাধারী হওয়ায় শ্রীদেবীর প্রতি অগাধ সম্মান রয়েছে। তার অনেক বড় ভক্ত আমি। আমার এত খুঁটিনাটি কথা বলা উচিত হয়নি।