মার্চ ২৮, ২০২৪

অর্থনীতির যেন ধার ধারে না বাংলাদেশের পুঁজিবাজার। দেশের প্রতিটি সেক্টরের ঈর্ষণীয় উন্নয়ন লক্ষণীয় হলেও পুঁজিবাজারের করুন দশা সচেতন নাগরিকদের ভাবিয়ে তুলছে। পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করে বার বার ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে  মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। এতটা দীর্ঘ সময়ের পতন বিশ্বে নজিরবিহীন ঘটনা।

সাম্প্রতিক পুঁজিবাজার বিষয়ে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের নেতৃত্বস্থানীয় নেতাদের সঙ্গে আলাপকালে সংগঠনটির প্রতিনিধিত্বকারী কাজী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সংকট কাটিয়ে উঠতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেছেন কমিশনের চেয়ারম্যান মহোদয়। সেখানে পুঁজিবাজার উন্নয়নে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানতে পারি। উল্লেখযোগ্য মিউচুয়াল ফান্ড , বন্ড এবং আইসিবির টার্ম ডিপোজিটকে পুঁজিবাজারের বিনিয়োগের এক্সপ্রজারের বাহিরে রাখা। একটি আইনের বাস্তবায়ন বর্তমানে লক্ষণীয় নয়, কাজীর গরু কিতাবে আছে গোয়ালে নেই। পুঁজিবাজার উন্নয়নে এই আইন গুলো বাস্তবায়ন না করেই বার বার ফ্লোর নিয়ে আলোচনা উদ্দেশ্যমূলক।

সরকারের নিকট তারল্য সমস্যা দূরীকরণে আইসিবিকে ১০ হাজার কোটি টাকার বিশেষ ফান্ড দেওয়ার অনুরোধ জানান এই নেতা।

উক্ত সংগঠনের সহ সভাপতি মহসিন মিয়াকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ১৬৯ টি শেয়ারের ফ্লোর তুলে লুন্ঠনের সুবিধে করে দেওয়া হয়েছে, বেশির ভাগ কোম্পানি টানা পতনের ধারায়  থাকায় বিনিয়োগকারীরা দিশেহারা। বেশ কিছু কোম্পানির শেয়ারের দাম ৪০% কাছাকাছি মূল্যপতন হয়েছে, যা স্পষ্ট প্রমান করে এখনো আস্থা ফিরেনি। বিনিয়োগকারীদের অর্থ নিলো, ঘর নিলো এখন আবার বাকি শেয়ারের ফ্লোর তুলে পরনের কাপড়টাও খুলে নিতে চায়।

সংগঠনটির সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ মামুন হোসেন শামীম বলেন, এতো দীর্ঘ সময় ধরে পুঁজিবাজার পতনের ধারায় থাকায় আমাদের দেশের অর্থনীতির জন্য লজ্জাজনক। মূল মার্কেটের গতি না ফিরিয়ে একের পর এক মানহীন আইপিও তালিকাভুক্ত করা হচ্ছে। দীর্ঘ মেয়াদি ,স্বল্প মেয়াদি কোন বিনিয়োগকারীরাই এই পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করে লাভবান নন। পুঁজিবাজারকে অবহেলিত রেখে একটি রাষ্টের অর্থনীতি খুব বেশি এগুতে পারবে না। আমাদের আশেপাশে দেশ গুলোর পুঁজিবাজার ভালো অবস্থানে রয়েছে ,আমাদের পুঁজিবাজারের এই করুন অবস্থার মূলেই রয়েছে দুর্নীতি এবং মানহীন কোম্পানি লিস্টিং।

একই বিষয়ে সংগঠনটির অর্থ বিষয়ক সম্পাদক পারভেজ আলীকে প্রশ্ন করলে তিনি প্রথমেই ১৬৯ টি কোম্পানির ফ্লোর তুলে দেওয়ার বিষয়টিকে নিন্দা করেন। কোনো গঠনমূলক ব্যবস্থা ছাড়া এভাবে ফ্লোর তুলে বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগকৃত পুঁজি ধ্বংস করার কোন যুক্তি খুঁজে পান না এই নেতা। তিনি বলেন সরকারের উপরের মহলে বিনিয়োগকারীদের বাস্তব চিত্র তুলে ধরতে হবে, পাশাপাশি ঘন ঘন মানহীন কোম্পানি লিস্টিং বন্ধ করার দাবি জানান।

বিশ্বব্যাপী মহামারীর বছরগুলো নিজেদের বুদ্ধিমত্তার সাথে মোকাবেলা করলেও বর্তমান অর্থনৈতিক সংকট বাংলাদেশের জন্য কৃত্রিম বলে মনে করেন বিনিয়োগকারীরা। তাদের বক্তব্য বিশেষ মহল নিজেদের স্বার্থে মূলত সংকট সৃষ্টির মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে অস্থিতিশীল করতে চাচ্ছে।

 

 

 

 

 

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *