মার্চ ২৮, ২০২৪

মূল্যস্ফীতি ও জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ব্যক্তিখাতে করমুক্ত আয়ের সীমা ৩ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫ লাখ টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)।

রোববার (৫ মার্চ) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত এক প্রাক-বাজেট আলোচনা অনুষ্ঠানে সংগঠনটি এমন প্রস্তাবনা উপস্থাপন করে।

অনুষ্ঠানে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে সহজ ও ব্যবসাবান্ধব আয়কর ব্যবস্থা, আয়কর ও মূল্যসংযোজন করের আওতা বৃদ্ধি, আয়কর সংগ্রহে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা, কর ব্যবস্থার সম্পূর্ণ অটোমেশন, স্থানীয় শিল্পায়ন উৎসাহিত করা এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করার ওপর জোরারোপ করে ডিসিসিআই।

সংগঠনটি এনবিআরের কাছে আয়কর, মূসক ও শুল্ক সংক্রান্ত মোট ৩০টি প্রস্তাব দেয়।

ডিসিসিআই’র সভাপতি ব্যারিস্টার মো. সামীর সাত্তার বলেন, লিস্টেড এবং নন-লিস্টেড কোম্পানির মধ্যে কর হারের ব্যবধান কমানোর পাশাপাশি স্থানীয় পর্যায়ে ব্যবসাকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে নন-লিস্টেড কোম্পানির কর্পোরেট করের হার আরও ২.৫ শতাংশ কমানোর প্রস্তাব করছি।

তিনি বলেন, বর্তমানে ৩০ লাখ টিআইএনধারী আয়কর রিটার্ন দাখিল করে, যার কারণে আমাদের কর-জিডিপির হার প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। এমন বাস্তবতায় আগামী ১০ বছরে করদাতার সংখ্যা কমপক্ষে ১-২ কোটিতে উন্নীত করতে এনবিআরকে একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করা উচিত।

এছাড়াও কর ও মুসক প্রদান সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়গুলো সহজে সমাধানের লক্ষ্যে ‘ইন্টিগ্রেটেড ট্যাক্স অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সিস্টেম (আইটিএএস)’ এবং ‘ইন্টিগ্রেটেড ভ্যাট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সিস্টেম (আইভিএএস)’ প্রবর্তনের আহ্বান জানান ডিসিসিআই সভাপতি সামীর সাত্তার।

তিনি বলেন, ভ্যাটের আওতা বহির্ভূত ব্যবসায়ের বার্ষিক টার্নওভারের ঊর্ধ্বসীমা ৩ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪ কোটি টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করছি। কারণ মূল্যস্ফীতির কারণে পণ্য সরবরাহ ও উৎপাদন খরচ অনেকাংশে বৃদ্ধি পাওয়ায় বিশেষ করে অতিক্ষুদ্র ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ব্যবসায় প্রকৃত মুনাফা অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে।

যেহেতু ব্যাংকে আমানতের ওপর ১০ থেকে ১৫ শতাংশ উৎসে করা কর্তন করা হয়, সেক্ষেত্রে আমানতের ওপর পুনরায় এক্সাইজ ডিউটি আরোপ, আমানতের ব্যয় বাড়িয়ে দেবে এবং ব্যাংকে সঞ্চয় নিরুৎসাহিত করবে। এমতাবস্থায় উৎসে কর প্রত্যাহারের প্রস্তাব করছি।

সভায় এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, এইচএস কোড ব্যবহারে ভুল কমানোর লক্ষ্যে এনবিআরের পক্ষ হতে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের নিয়মিতভাবে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে ব্যবসায়ীরা চাইলে এনবিআর থেকে অ্যাডভান্স রুলিং নিতে পারেন। এইচএস কোড ব্যবহারে ব্যবসায়ীদের আরো সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান।

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, দেশে ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনার প্রক্রিয়া সহজ করার জন্য নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে, তবে কমপ্লায়েন্স ইস্যুতে এনবিআর সর্বদাই কঠোর অবস্থান থাকবে। ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড আরো সহজ করার জন্য তিনি উদ্যোক্তাদের সহযোগিতা কামনা করেন। এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধিতে দেশে করজাল বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই।

অনুষ্ঠানে ডিসিসিআই সহ-সভাপতি এস এম গোলাম ফারুক আলমগীর (আরমান) ও সহ-সভাপতি মো. জুনায়েদ ইবনে আলীসহ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *