এপ্রিল ১৯, ২০২৪

আলোচিত আল-কাদির ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের জামিনের মেয়াদ বেড়েছে। ইসলামাবাদ হাইকোর্টের আদেশ অনুযায়ী, মামলার প্রধান আসামি ইমরান খান আগামী ৩১ তারিখ পর্যন্ত জামিনে থাকবেন।

এর আগে গত ১২ মে আল-কাদির ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ইমরান খানকে দু’সপ্তাহের জামিন দিয়েছিলেন ইসলামাবাদ হাইকোর্ট। আদালতের সেই আদেশ অনুযায়ী এ মামলার প্রধান আসামি ও পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খানের জামিনের মেয়াদ ছিল ২৬ মে পর্যন্ত।

মঙ্গলবার ইসলামাবাদ হাইকোর্টে ইমরান খানের পক্ষে জামিনের মেয়াদ বাড়ানোর পিটিশনটি জমা দেন তার আইনজীবী ব্যারিস্টার গওহর। বুধবার সেই পিটিশনের ওপর শুনানি হয়। শুনানিতে পরক্ষোভাবে পিটিশনকে সমর্থন করে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও পাকিস্তানের অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুনাওয়ার দুগাল এবং ইসলামাবাদের অ্যাডভোকেট জেনারেল জাহাঙ্গীর জাদুন জানান, আলোচিত এই মামলা পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় সাক্ষ্য-প্রমাণ জোগাড় করতে আরও সময় প্রয়োজন রাষ্ট্রপক্ষের।

শুনানি শেষে বিচারপতি মিঞাগুল হাসান আওরঙ্গজেব আগামী ৩১ মে পর্যন্ত আল-কাদির ট্রাস্ট মামলায় ইমরান খানের জামিন মঞ্জুর করেন।

গত ৯ মে ইসলামাবাদ হাইকোর্টে দু’টি মামলার শুনানিতে হাজিরা দিতে এসে গ্রেপ্তার হন ইমরান খান। পাকিস্তানের সীমান্তরক্ষী ও আধাসামরিক বাহিনী রেঞ্জার্স এবং কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টিবিলিটি ব্যুরো’র (ন্যাব) একটি যৌথ দল আল-কাদির ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় হাইকোর্ট ভবন এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।

যে পরোয়ানার ভিত্তিতে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করা হয়, সেটি ন্যাব ইস্যু করেছিল গত ১ মে। ন্যাবের চেয়ারম্যান ও অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাজির আহমেদ বাট স্বাক্ষরিত সেই পরোয়ানা অনুসারে, প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের সোহাওয়া শহরে আল-কাদির বিশ্ববিদ্যালয় প্রকল্পের নামে ব্রিটেনের একটি রিয়েল এস্টেট কোম্পানিকে রাষ্ঠীয় কোষাগার থেকে ১ কোটি ৯০ লাখ ডলার দিয়েছিলেন ইমরান খান, তার বর্তমান স্ত্রী বুশরা বিবি এবং ইমরানের রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের কয়েকজন জেষ্ঠ্য নেতা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য যে জমি বরাদ্দ নেওয়া হয়েছিল, সেখান থেকেও ইমরান ও বুশরা বিবি অবৈধ সুবিধা নিয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয় পরোয়ানায়।

এদিকে ইমরানকে গ্রেপ্তারের পর পরই তার আইনজীবীরা এই গ্রেপ্তারকে অবৈধ ঘোষণার আর্জি জানিয়ে ইসলামাবাদ হাইকোর্টে পিটিশন দিয়েছিলেন। কিন্তু সে সময় সেই পিটিশনকে নাকচ করে দিয়ে গ্রেপ্তারকে ‘বৈধ’ বলে ঘোষণা করেন।

ইসলামাবাদ হাইকোর্টের এই ঘোষণার পর নজিরবিহীন বিক্ষোভ শুরু হয় পাকিস্তানে। পিটিআই কর্মী-সমর্থকরা ইমরানের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে দেশজুড়ে সরকারি ও সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন স্থাপনা ও সেনানিবাসে হামলা চালান।

পরে সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এর মধ্যে গত সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী গত ১২ মে ইমরান খানকে এই মামলায় দু’সপ্তাহের জামিন মঞ্জুর করেন ইসলামাবাদ হাইকোর্ট।

 

সূত্র : ডন

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *